আমরা আপওয়ার্ক এ প্রপোসাল পাঠানোর সময় বা বিড করার সময় ক্লায়েন্ট এর আগের জব হিস্ট্রি বা ক্লায়েন্ট সম্পর্কে কিছু চেক না করেই বিড করে ফেলি, যার জন্য আপওয়ার্ক এ প্রচুর বিড করার পর ও আমরা অনেক সময় কাজ পাই না। আজ আমরা জেনে নিবো আপওয়ার্ক এ প্রপোসাল পাঠানোর আগে এ সঠিক ক্লায়েন্ট চিনবেন কিভাবে?
১. ক্লায়েন্ট এর হায়ার রেট (%):
আপওয়ার্ক এ যেকোনো জব এ ক্লিক করলে হাতের ডান পাশে ক্লায়েন্ট এর প্রিভিয়াস অনেক ইনফরমেশন দেয়া থাকে। দেখে নিন ক্লায়েন্ট এর হায়ার রেট কত পার্সেন্ট। কোনো ক্লায়েন্ট এর হায়ার রেট ৬০% মানে ওই ক্লায়েন্ট ১০০ টি জব পোস্ট করলে ৬০টি জব এ কাউকে না কাউকে হায়ার করে। অনেক ক্লায়েন্ট এর স্বভাব এমন হয়, অনেক জব পোস্ট করে কিন্তু পছন্দের ফ্রিল্যান্সার খুঁজে পায় না, তাই সচরাচর হায়ার করে না। এমন ক্লায়েন্ট এর জব এ বিড করলে আপনি যত ভালো কভার লেটার লিখেন না কেন হায়ার করার চান্স কম থাকবে। তাহলে কেনই বা আপনি আপনার পেইড কানেক্ট নষ্ট করবেন বিড করে। তাই বিড করার আগে দেখে নিন ক্লায়েন্ট এর হায়ার রেট ৭০% এর উপর আছে কিনা।
২. ক্লায়েন্ট এর অ্যাভারেজ আওয়ারলি রেট:
এটি হলো ক্লায়েন্ট প্রিভিয়াস ফ্রিল্যান্সারদের হায়ার করার সময় অ্যাভারেজ কত ডলার আওয়ারলি রেট এ হায়ার করে। আমাদের প্রোফাইল এ আমাদের যোগ্যতা ও এক্সপেরিয়েন্স অনুযায়ী আওয়ারলি রেট দিয়ে থাকি। ধরা যাক আমার প্রোফাইল এর আওয়ারলি রেট ১৫/hr (ঘন্টায় ১৫ ডলার), এখন একটা আওয়ারলি বেসিস কাজে বিড করার সময় আমরা ক্লায়েন্ট এর অ্যাভারেজ আওয়ারলি রেট চেক না করেই আমাদের প্রোফাইল এ দেয়া রেট এ বিড করি। ধরা যাক ক্লায়েন্ট এর অ্যাভারেজ আওয়ারলি রেট হলো ৭ ডলার, অর্থাৎ আগের ফ্রীলান্সারদের তিনি এই রেট এই হায়ার করেছেন। তো আপনি সেটা না দেখে আপনার প্রোফাইল এ দেয়া ১৫ ডলার / hr এ বিড করলে অবশ্যই আপনার কাজটি পাওয়ার চান্স কম থাকবে। তাই বিড করার আগে ক্লায়েন্ট এর অ্যাভারেজ আওয়ারলি রেট দেখে তার কাছাকাছি এমাউন্ট এ বিড করুন।

৩. ক্লায়েন্ট এর প্রিভিয়াস অ্যাভারেজ রেটিং:
বিড করার আগে এ দেখে নিন ক্লায়েন্ট এর আগে কতজন ফ্রিল্যান্সারকে হায়ার করেছেন ও তার অ্যাভারেজ রেটিং কত? জব পোস্ট এর ডানেই এটি দেখতে পারবেন। চেষ্টা করবেন যেসব ক্লায়েন্ট এর অ্যাভারেজ রেটিং ৫ এ ৪.৮ বা তার উপরে তাদের কাজে বিড করতে।
৪. ক্লায়েন্ট এর টোটাল স্পেন্ডিং ও পেমেন্ট মেথড ভেরিফাইড কিনা দেখে নিন: অনেক ফেইক ক্লায়েন্ট থাকে যারা নতুন একাউন্ট খুলে ফ্রিল্যান্সার হায়ার করে পেমেন্ট না করেই চলে যায়, তাদের পেমেন্ট মেথড সাধারণত ভেরিফাইড হয় না। তবে আন-ভেরিফাইড ক্লায়েন্ট মানে-ই যে খারাপ তা নয়, নতুন ক্লায়েন্টদেরও পেমেন্ট মেথড আন-ভেরিফাইড থাকতে পারে। সুতরাং বিড করার আগে দেখে নিন ক্লায়েন্ট এর যথেষ্ট স্পেন্ডিং আছে কিনা (মানে টোটাল কত ডলার স্পেন্ড করেছে ফ্রিল্যান্সার হায়ার করে) ও পেমেন্ট মেথড ভেরিফাইড কিনা।

৪. ক্লায়েন্ট এর টোটাল স্পেন্ডিং ও পেমেন্ট মেথড ভেরিফাইড কিনা দেখে নিন:
অনেক ফেইক ক্লায়েন্ট থাকে যারা নতুন একাউন্ট খুলে ফ্রিল্যান্সার হায়ার করে পেমেন্ট না করেই চলে যায়, তাদের পেমেন্ট মেথড সাধারণত ভেরিফাইড হয় না। তবে আন-ভেরিফাইড ক্লায়েন্ট মানে-ই যে খারাপ তা নয়, নতুন ক্লায়েন্টদেরও পেমেন্ট মেথড আন-ভেরিফাইড থাকতে পারে। সুতরাং বিড করার আগে দেখে নিন ক্লায়েন্ট এর যথেষ্ট স্পেন্ডিং আছে কিনা (মানে টোটাল কত ডলার স্পেন্ড করেছে ফ্রিল্যান্সার হায়ার করে) ও পেমেন্ট মেথড ভেরিফাইড কিনা।

৫. ক্লায়েন্ট এর প্রিভিয়াস জব হিস্ট্রি ও রিভিউ দেখে নিন:
সাধারণত ফ্রিল্যান্সাররা খুব খারাপ পরিস্থিতির শিকার না হলে ক্লায়েন্ট কে খারাপ রিভিউ দেয়না। চলে যান জব পোস্ট এর একদম নিচে। দেখতে পাবেন ক্লায়েন্ট এর আগের জব হিস্ট্রি। প্রতিটি জব এর ক্লায়েন্ট ও ফ্রিল্যান্সার রিভিউ দুটোই দেখে নিন। ফ্রিল্যান্সার ক্লায়েন্ট সম্পর্কে কি বলছে তা দেখে আইডিয়া করতে পারবেন ক্লায়েন্ট এর স্বভাব সম্পর্কে। আবার ক্লায়েন্ট ফ্রিল্যান্সারদের ভালো রেটিং ও রিভিউ দিয়েছে কিনা তাও দেখে নিন। কারণ অনেক ক্লায়েন্টকে সহজে সন্তুষ্ট করা যায় না এবং ম্যাক্সিমাম ফ্রিলান্সারকেই খারাপ রেটিং দিয়ে থাকে। আপনি নিশ্চই চান না এমন ক্লায়েন্ট এর হাতে পড়তে?

৬. আপওয়ার্ক এ বিড করার আগে দেখে নিন ক্লায়েন্ট এর লোকেশন:
পৃথিবীর সব দেশেই ভালো খারাপ ক্লায়েন্ট আছে। “নিজে ভালো তো সব ক্লায়েন্ট ভালো” – কথাটি প্রচলিত থাকলেও আমার প্রায় এক যুগ এর ক্লায়েন্ট হ্যান্ডেল এর অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, ইউরোপ, আমিরিকা ও অস্ট্রেলিয়া মহাদেশের ক্লায়েন্টরা ভালো। আফ্রিকা ও এশিয়া কন্টিনেন্ট এর ক্লায়েন্টদের কাজ শুরুর দিকে না নেয়াই ভালো। আমি আসলে তাদের ছোট করছি না। তবে তাদের মধ্যে বাজেট যাচাই, খুঁতখুঁতে ভাব, সহজেই রেগে যাওয়া, বার বার রিভিশন ও ক্যানসেল এর প্রবণতা রয়েছে। আর লেডি ক্লায়েন্ট নিয়ে আমার মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে।

৭. ক্লায়েন্ট এর মেনশন করে দেয়া স্কিল এন্ড এক্সপার্টাইস দেখে নিন (প্রপোসাল বেস্ট ম্যাচ):
আপওয়ার্ক এর জব ডেসক্রিপশন এর একটু নিচেই পাবেন ক্লায়েন্ট কি কি স্কিল চাচ্ছে। দেখে নিন আপনার প্রোফাইল এ এই স্কিলসেট গুলো অ্যাড করা আছে কিনা। তাহলে অনেকের মাঝে বা অনেকের পরে বিড করেও আপনি চলে আসতে পারেন টপ এ (বেস্ট ম্যাচ) সেকশন এ। সাধারণত অনেক প্রপোসাল এর মাঝে আপওয়ার্ক ১-২ জনকে বেস্ট ম্যাচ দেখিয়ে সবার উপরে নিয়ে আসে। তবে বেস্ট ম্যাচ আপনার টোটাল ইনকাম, জব সাকসেস স্কোর, টপ রেটেড ব্যাজ ও সেই স্কিল এর কয়টি কাজ করেছেন তার উপরও নির্ভর করে।

৮. তুলনামূলক কম কানেক্ট এর জব এ বিড করুন:
নতুন অবস্থায় আপনার কানেক্ট কিন্তু মূল্যবান। আপওয়ার্ক আপনাকে প্রথম মাসে কিছু কানেক্ট ফ্রি দিবে। তার পর কিন্তু আপনাকে কানেক্ট কিনে বিড করতে হবে। আর আপওয়ার্ক এর জব এর বাজেট ও ক্লায়েন্ট এর প্রিভিয়াস রেকর্ড এর উপর ভিত্তি করে ওই জব এ এপলাই করতে কত কানেক্ট খরচ করতে হবে তা আপওয়ার্ক-ই নির্ধারণ করে। নতুন অবস্থায় ৪ বা ৬ কানেক্ট এর বেশি লাগে এমন জব এ এপলাই না করা ভালো।
৯. ২০% জব এ বিড করতে প্রপোজাল বুস্ট ফীচার ব্যবহার করুন:
প্রপোজাল বুস্ট হলো এক্সট্রা কিছু কানেক্ট এর বিনিময়ে আপনি পরে বিড করেও উপরে চলে আসতে পারেন (ধরা যাক আপনার মতো ৫০ জন বিড করলো, আপনাকে টপ এ দেখাচ্ছে) । অর্থাৎ ক্লায়েন্ট আপনাকে একদম টপ এ দেখবে। তবে আপনার প্রপোসাল এর পাশে “বুস্টেড” লিখা দেখাবে। নতুন অবস্থায় এই ফীচার একদম ব্যবহার না করাই ভালো। তাহলে ক্লায়েন্ট ভাবতে পারে আপনার যথেষ্ট কাজ এর অভিজ্ঞতা নেই, প্রোফাইল এ রিভিউ নেই, বুস্ট করে টপ এ এসেছেন। সেক্ষেত্রে হায়ার হওয়ার চান্স আরো কমে যায়।
তবে যাদের যথেষ্ট রিভিউ রয়েছে প্রোফাইল এ তারা ২০% জব এ বুস্ট ফীচার ব্যবহার করতে পারেন। সাধারণত ক্লায়েন্ট এর জব পোস্ট এর ডেসক্রিপশন দেখে বোঝা যায়, ক্লায়েন্ট আর্জেন্টলি হায়ার করতে চাচ্ছে কিনা। আর্জেন্টলি হায়ার করতে চাওয়া ক্লায়েন্ট এর জব এ বুস্ট করে টপ এ থেকে দ্রুত হায়ার হওয়ার একটি সুযোগ থাকে। তবে বেশি কানেক্ট দিয়ে বুস্ট না করে ২-৩ কানেক্ট বাড়িয়ে বুস্ট করা ভালো। বুস্ট আউটডেটেড হয়ে গেলে আপনি বুস্ট এ ব্যবহৃত আপনার কানেক্ট গুলো ফেরৎ পেয়ে যাবেন।

১০. ফিক্সড প্রাইস এর কাজ এ প্রিভিয়াস ফ্রিল্যান্সারদের বিড রেঞ্জ দেখুন ও ক্লায়েন্ট এর এস্টিমেটেড বাজেট এর কাছাকাছি বাজেট এ বিড করুন:
আপওয়ার্ক এ মেম্বারশিপ প্লাস নেয়া থাকলে আপনি প্রতিটি জব এ বিড করার সময় ম্যাক্সিমাম ও মিনিমাম বিড রেট দেখতে পাবেন। অর্থাৎ আপনার আগে যারা ওই জব এ বিড করেছে তাদের ম্যাক্সিমাম ও মিনিমাম বিড রেঞ্জ দেখতে পাবেন। আইডিয়া পাওয়ার পর আপনি দেখুন ক্লায়েন্ট এর বাজেট কত? ফিক্সড প্রাইস এর কাজে ক্লায়েন্ট এর এস্টিমেটেড বাজেট দেখতে পাবেন।
যদি ক্লায়েন্ট এর বাজেট ২০০ ডলার হয়, আপনি ওই কাজ ৫০০-৬০০ ডলার এ বিড করলে ইন্টারভিউ বা ইনবক্স এ knock পাওয়ার চান্স থাকবে না বললেই চলে। ধরা যাক আপনার বাজেট মন মতো হলো না, তারপর ও বিড করার সময় ক্লায়েন্ট এর এস্টিমেটেড বাজেট এর কাছাকাছি এমাউন্ট এ বিড করুন। তারপর ক্লায়েন্ট ইনবক্স এ আসলে আপনি ভিডিও কল এ নিয়ে আসুন, আপনি সুন্দর ভাবে ভিডিও কল এ যদি ক্লায়েন্ট এর সাথে কম্যুনিকেট করতে পারেন, আপনি কি কি ফীচার দিবেন বুঝিয়ে বলতে পারেন, আপনার আগের কাজের স্যাম্পল দেখতে পারেন, ক্লায়েন্ট এর বাজেট এমনিতেই বাড়িয়ে নিতে পারবেন।

১১. জব পোস্ট হওয়ার সাথে সাথে বিড করুন ও বেস্ট ম্যাচ সেকশন থেকে জব ফাইন্ড করার চেষ্টা করুন:
সাধারণত একটা জব পোস্ট করার পর ১৫-২০ মিনিট ক্লায়েন্ট অনলাইন এ থাকে। যদি এই সময়ের মধ্যে বিড করে ফেলা যায় তাহলে কম্পিটিশন কম থাকে, ক্লায়েন্ট এর নজরে পড়ার চান্স ও বেশি থাকে এবং সর্বোপরি হায়ার হওয়ার চান্স বেড়ে যায়। বিশেষ করে নতুন ক্লায়েন্টদের ক্ষেত্রে এই ট্রিকসটি চমৎকার কাজে দেয়। ২০-৫০ জন এপলাই করে ফেলার পর বিড করলে কাজ পাওয়ার সুযোগ যথেষ্ট কমে যায়। কারণ ততক্ষনে অনেক এক্সপার্টরা বিড করে ফেলে, ক্লায়েন্ট এর হাতে যথেষ্ট অপসন চলে আসে। সাধারণত ভোরের দিকে US, UK সহ ভালো ক্লায়েন্টদের জব পোস্ট গুলো আসতে থাকে।
আরেকটি ব্যাপার হলো, আমরা সবসময় “ফাইন্ড জব” এ ক্লিক করে আমাদের স্কিল লিখে সার্চ করি। যেমন : লোগো ডিজাইন, ল্যান্ডিং পেজ ডিজাইন ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট ডিজাইন। এভাবে সবাই বিড করে। তাই কমন কিছু জব এ প্রচুর প্রপোসাল জমা পড়ে। আসুন অন্যভাবে ভাবি। “ফাইন্ড জব” এ ক্লিক করে “বেস্ট ম্যাচ” সেকশন এ চলে যান। এখানে সেই জব গুলোই থাকে যা আপনার আপওয়ার্ক প্রোফাইল এর স্কিল এ দেয়া স্কিলসেট গুলোর সাথে ম্যাচ করে। সুতরাং “বেস্ট ম্যাচ” সেকশন এর কাজ গুলোর ৭০% ই আপনি পারেন। কিন্তু দেখবেন এই জব গুলোতে প্রপোসাল অনেক কম জমা পড়েছে কারণ ক্লায়েন্ট এর জব টাইটেল, ডেসক্রিপশন-এ “লোগো ডিজাইন, ল্যান্ডিং পেজ ডিজাইন” এই কমন ওয়ার্ড গুলো নেই। বিড করে ফেলুন এই কাজগুলোতে। প্রপোসাল কম জমা পড়ায় আপনার হায়ার হওয়ার চান্স বেড়ে যাবে।

১২. ফিক্সড বাজেট এর কাজ গুলো মাইলস্টোন এ ভাগ করে নিন:
ফিক্সড জব এ বিড করার সময় ২ টি অপশন পাবেন। By মাইলস্টোন ও By প্রজেক্ট। By প্রজেক্ট মানে হলো পুরো কাজের বাজেট যদি ২০০ ডলার হয় পুরোটা একটি মাইলস্টোন এ নেয়া। মানে কাজ শেষ হলে পুরো প্রজেক্ট এর টাকা একবারে পাবেন। আর By মাইলস্টোন মানে হলো ২-৩ ভাগ এ আপনি পুরো প্রজেক্ট এর বাজেট কে ভাগ করে নিলেন।
বিড করার সময় প্রজেক্ট কে ২টি মাইলস্টোন এ ভাগ করে নেয়া ভালো। অনেক সময় ক্লায়েন্ট এর পুরো প্রজেক্ট-এ অনেক গুলো ছোট ছোট কাজ থাকতে পারে। অনেক সময় এমন হতে পারে আপনি সব গুলো কাজ প্রপারলি করতে পারছেন না, বা ক্লায়েন্ট আপনার কাজ এর কিছু অংশ পছন্দ করলো আর কিছু করলো না। তখন আপনি একটি মাইলস্টোন এর টাকা নিয়ে প্রজেক্ট টি এন্ড করে দিতে পারলেন। যদি কাজ টি By প্রজেক্ট নেয়া হতো তাহলে পুরো জবটি ক্যানসেল হতো।

১৩. ফেইক ক্লায়েন্ট থেকে দূরে থাকুন। ফেইক ক্লায়েন্ট চিনবেন কিভাবে?
– অনেক জব পোস্ট এ দেখা যায় ক্লায়েন্ট টেলিগ্রাম বা হোয়াটসএপ বা অন্য কোনো সোশ্যাল চ্যানেল এ যোগাযোগ করতে বলছে। দূরে থাকুন এই সব ক্লায়েন্ট থেকে।
– জব এর মার্কেট ভ্যালু থেকে বাজেট অনেক বেশি। আপনি জানেন একটা সিম্পল ওয়েবসাইট ডিজাইন করতে ৫০০-৮০০ ডলার যথেষ্ট। এমন একটি জব এ দেখলেন ক্লায়েন্ট এর এস্টিমেটেড বাজেট ২০০০-৩০০০ ডলার। দূরে থাকুন এই ক্লায়েন্টদের থেকে।
– অনেক সময় জব ডেসক্রিপশন এ আপনাকে বলা হচ্ছে কোনো অপরিচিত লিংক এ ক্লিক করতে। বার বার বলা হচ্ছে লিংক এ ক্লিক করে ডাউনলোড করতে, ধরে নিন ইনি কোনো মালিসিয়াস লিংক দিয়ে আপনার ব্রাউসার এ কুকি হাইজ্যাক বা কম্পিউটার এ Ransomware বা ভাইরাস এটাক করে আপনার কম্পিউটার হ্যাক করতে চাচ্ছে। আর লিংক দেখেই বুঝতে পারবেন এটা স্প্যাম লিংক। সাধারন ওয়েবসাইট লিংক বা গুগল ডক্স এর লিংক নয়।
– অনেক সময় ক্লায়েন্ট ইনবক্স এ এসে বলে আগে কাজ করে দিতে পারে হায়ার করবে। দূরে থাকুন এই ক্লায়েন্ট দের থেকে। ৮০% ক্ষেত্রেই তারা আপনাকে কাজ করিয়ে চলে যাবে। পেমেন্ট দিবে না।
– ইনবক্স এ আপনাকে বলবে বাইরে পেমেন্ট করবে, ধরুন আপনাকে বলবে – আমেরিকার কোনো ব্যাঙ্ক ইনফো দিতে সেখানে চেক দিবে, বা ক্রিপ্টো তো পেমেন্ট করতে চাবে। এদের থেকে দূরে থাকাই ভালো।

১৪. রিভিউ বিক্রেতা ক্লায়েন্ট এর জব এ বিড করে কানেক্ট নষ্ট করবেন না? রিভিউ বিক্রেতা ক্লায়েন্ট চিনবেন কিভাবে?
এখন আপওয়ার্ক এ রিভিউ বিক্রেতাদের দৌরাত্ম অনেক বেড়ে গেছে। এখন তো ফেইসবুক এ বুস্ট করে এই ধরণের সার্ভিস সেল করা হচ্ছে। মনে রাখবেন আজকের একটি ভুল আপনাকে ৫ বছর পর ভুগাতে পারে। ৫ বছর পর ৫০০ রিভিউ সহ আপনার একাউন্ট সাসপেন্ড হলে নিশ্চই আপনার ভালো লাগবে না। তাই কেন এমন রিস্ক নিবেন? আসল কোথায় আসি, আপনি রিভিউ কিনবেন না ভালো কথা। কিন্তু আপনি আপওয়ার্ক এ অনেক জব পোস্ট পাবেন যাদের জব পোস্ট টি করা হয়েছে রিভিউ বিক্রি করার জন্য। সুতরাং আপনি ওই কাজ এ বিড করলে ও আপনাকে হায়ার করবে না। তাহলে কেন আপনি কানেক্ট নষ্ট করবেন ওই জব এ বিড করে? চিন্তা করছেন কিভাবে বুঝবো? খুব সহজ। আপনি বিড করার আগে এ প্রতিটি ক্লায়েন্ট এর প্রিভিয়াস জব হিস্ট্রি চেক করবেন। যেসব ক্লায়েন্ট প্রোফাইল থেকে রিভিউ বিক্রি হয় তাদের প্রজেক্ট বাজেট ৫-১০ ডলার এর বেশি হয় না। আপনি যখন দেখবেন কোন ক্লায়েন্ট এর প্রিভিয়াস সকল জব ৫-১০ ডলার এর এবং ক্লায়েন্ট ফ্রিল্যান্সারকে সব সময় ৫ ষ্টার দিচ্ছে বুঝে নিবেন উনি রিভিউ বিক্রেতা। বিড করা থেকে বিরত থাকুন।
আশা করি আপওয়ার্ক মার্কেটপ্লেস এ বিড করার সময় এই স্টেপ গুলো ফলো করলে প্রপোজাল পাঠালে দ্রুত কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। মার্কেটপ্লেস এর ক্লায়েন্ট কে কখনোই বাইরে নেয়ার চিন্তা করবেন না। আর ক্লায়েন্ট এর প্রজেক্ট বাজেট যাই হোক না কেন প্রতিটি ক্লায়েন্ট এর ভ্যালু মার্কেটপ্লেস এ সমান। তাই প্রতিটি ক্লায়েন্ট এর যত্ন নিন। ক্লায়েন্টদের লং টার্ম সার্ভিস দেয়ার মনোভাব রাখুন। মনে রাখবেন যেকোনো একটি ক্লায়েন্ট পারে আপনার জীবন চেঞ্জ করে দিতে। শুভকামনা সবাইকে।